দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে অতি দরীদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্পের সুবিধাভোগী শ্রমিকদের কাজ থেকে বিরত রেখে তাদেরকে দিয়ে জোরপূর্বক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে মিছিল করিয়ে নিলেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। মিছিলে না গেলে নাম কেটে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
সারোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজ ১১ মে (শনিবার) সকালে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতীভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে অতি দরীদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্পের সুবিধাভোগী, ভিজিডি কার্ডধারি, স্বপ্ন প্রকল্পের শ্রমিকদেরকে জমায়েত করে তাদেরকে এক চেয়ারম্যান এবং এক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদকে ঘোড়া মার্কা এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শফিকুল ইসলাম খোকাকে কলস মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যানের বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে মিছিল শেষ করে মাটিকাটা শ্রমিকদের স্ব-স্ব সাইটে গিয়ে মাটিকাটা শুরু করার নির্দেশ দেন।
চেয়ারম্যানের বক্তব্য শেষে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে ঘোড়া মার্কার সমর্থনে মাটিকাটা শ্রমিক এবং নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আকন্দের বাড়ীর সামনে গিয়ে কাঠারবিল বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এসে শেষ হয়।
হাতীভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ০১ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার আমরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের দিয়ে মাটি কাটার কাজ বন্ধ রেখে, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্পের ৪০ দিনের কর্মসূচির সুবিধাভোগী এবং ভিজিডি কার্ডধারি ও স্বপ্ন প্রকল্পের শ্রমিকদের দিয়ে মিছিল মিটিং করতে চেয়ারম্যানকে নিষেধ করেছিলাম কিন্তু তিনি আমার কথা শোনেননি। জোরপূর্বক শ্রমিকদেরকে মিটিং মিছিল করাতে বাধ্য করেন। মিছিলে না আসলে এবং চেয়ারম্যানের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট না দিলে নাম কেটে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। তিনি আরো জানান, বাদশা আলী নামে এক শ্রমিককে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক মিছিলে নিয়ে যায়। মিছিলে অংশগ্রহণ না করলে নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দেয়। কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে এমনটি জানা গেছে।
মিছিলে প্রায় শতাধিক মাটি কাটার শ্রমিক অংশগ্রহণ করে। এ ব্যাপারে জানতে হবে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে ফোন দিলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, এ বিষয়টি অবগত হলে আমি সাথে সাথে ইউপি চেয়ারম্যান কে ফোন দিয়ে নিষেধ করে দিয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে এই ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটে থাকলে সেটি সে সঠিক করে নাই। আমি বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন চেয়ারম্যান সাহেব যেটি করেছেন সেটি সঠিক কাজ করেন নাই।